জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নির্বাহী কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ইশতেহার নয়, এটি বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির সনদ। তার দাবি, এই দফাগুলো বাস্তবায়ন হলেই দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হবে।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিপুর মাঠে স্থানীয় কৃষকদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘কৃষিকথা ও কৃষক সমাবেশ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত এবং দেশ গঠনের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি যে ৩১ দফা ঘোষণা করেছে, তার ২৭তম দফায় কৃষকদের স্বার্থ ও প্রসঙ্গ বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল তার বক্তৃতায় ঐতিহ্যবাহী নাজিরপুর মাঠের পাশে অবস্থিত ‘জিয়া খাল’–এর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই এই খালটি খনন করেছিলেন। এ সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, বিএনপি আবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে নতুন করে খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে এবং তিনি চেষ্টা করবেন যেন জিয়াউর রহমানের সন্তান তারেক রহমান এই জিয়া খালটির পুনঃখনন করেন।

নিজেকে কৃষকের সন্তান দাবি করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তিনি কৃষকদের দুঃখ-কষ্ট খুব ভালো বোঝেন। যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, তাই কৃষকদের সমস্যাগুলো নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা জরুরি। তিনি জানান, বর্তমানে কৃষক যে বীজ বা ট্রাক্টর কেনেন, সেগুলোর দাম কোম্পানি ঠিক করে, কিন্তু তারা নিজের উৎপাদিত ধান, পাট বা গমের দাম নির্ধারণ করতে পারেন না। তাই চাষিদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করার জোর দাবি জানান তিনি।

কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিপুলসংখ্যক কৃষক-কৃষাণী এই সমাবেশে যোগ দেন। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্যসহ লাঙ্গল, জোয়াল, মাথালি, কাচিসহ কৃষিকাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম নিয়ে অংশ নেন। বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে নাজিপুর মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।

কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ খায়েরের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ছাড়াও এতে বক্তব্য দেন কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ওয়াজেদ আলী খাঁন চাষী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কৃষিবিদ মো. শফিউল্লাহ মজুমদার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি তত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আহমেদ খায়রুল হাসান, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, পল্লিকবি সত্তার মিয়া, নাজিপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন মুন্সী, নুরুল ইসলাম, কৃষক আমির হামজা ও জমশেদ আলীসহ প্রমুখ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।