প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, “যেদিকে তাকাই, ব্যবসায়ীদের কোনো না কোনো সিন্ডিকেট সক্রিয় দেখি।” আজ শনিবার রাজধানীর বনানীতে এক হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ২০৩০: অংশীদারত্বমূলক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে’ শীর্ষক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) এবং নিমফিয়া পাবলিকেশন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, দেশের কাঠামোগত অর্থনৈতিক পরিবর্তন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যবসায়ী শ্রেণির গোপন স্বার্থসংশ্লিষ্ট সমঝোতা। তাঁর মতে, “আমি নিজে বেসরকারি খাতে দীর্ঘদিন কাজ করেছি এবং ব্যবসায়ের পক্ষে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে শুরু করে প্রায় সব খাতে কাঠামোগত সংস্কার থেমে যাচ্ছে—কারণ অনেক ব্যবসায়ী সরকারের সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে চুক্তিতে যাচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকে সেমিনারে বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু পরে দেখা যায় তাঁরা কোনো মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এতে প্রকৃত সংস্কারের প্রয়াস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই দ্বিচারিতা রোধ করা না গেলে কাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব নয়।” অনুষ্ঠানে তিনি অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্রের প্রসঙ্গও তোলেন এবং বলেন, শ্বেতপত্রের সুপারিশগুলো হয়তো জনসমক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না, তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া থেমে নেই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সানেমের সেলিম রায়হান, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর এবং আইএফসি’র কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান। পুরো সেশনটি সঞ্চালনা করেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার।
পিআরআই ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ বইটি পরিচয় করিয়ে দেন এবং জানান, বইটিতে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের রূপরেখা ও সম্ভাব্য কৌশল তুলে ধরা হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী তাঁর বক্তব্যের শেষাংশে জানান, “হয়তো এখনো জনমানসে পরিবর্তনের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না, তবে আমি এবং আমার সহকর্মীরা প্রতিনিয়ত শ্বেতপত্রের সুপারিশগুলো বাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিবেচনায় নিচ্ছি। দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এটি অব্যাহত থাকবে।