১৯ বছর পর খুলনার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিসিবির সাবেক সভাপতি আলী আসগার লবী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীতে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তার প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি সামনে আসে। তবে তার এই সক্রিয়তায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল।
খুলনার একটি আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলী আসগার লবীর প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন রাজনীতিতে উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, দীর্ঘ ১৫ বছর রাজপথে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা নেতাকর্মীদের পাশে না থেকেও লবীর সক্রিয়তা গ্রহণযোগ্য নয়।
আলী আসগার লবী বলেন, “আমি দলের কর্মী। দলের নির্দেশ পেয়ে খুলনায় কর্মসূচিতে এসেছি। দল যদি মনে করে আমাকে নির্বাচন করতে হবে, আমি করব। সিদ্ধান্ত দলের। দল মনে না করলে নির্বাচন করব না। সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত নয়।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-৫ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্তত চারজন প্রার্থী ইতোমধ্যে সক্রিয় রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডুমুরিয়া বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, জেলা যুবদলের সভাপতি ইবাদুল হক রুবায়েদ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা শফি মোহাম্মদ খান এবং প্রবাসী নেতা টিকু রহমান।
ডুমুরিয়া বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ বলেন, “গত ১৫ বছর হামলা-মামলার শিকার নেতাকর্মীদের জামিন, হাসপাতালের চিকিৎসা আর পরিবারের বাজার করে দিয়েছি। সব রাজনীতিবীদই প্রত্যাশা রাখেন। তবে মনে কষ্ট থাকবে।”
যুবদল সভাপতি ইবাদুল হক রুবায়েদ, যিনি রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন, তার অনুসারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লবীর প্রত্যাবর্তন নিয়ে সমালোচনা করছেন।
লবী তার বক্তব্যে বলেন, “সরকারের সীমাহীন চাপের কারণে জনগণের কাছে সরাসরি আসতে পারিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের জেলে আমার তিন বছরের বেশি সময় কেটেছে। আয়না ঘরের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল চারবার। আমার ব্যাংক হিসাবগুলো এখনো বন্ধ।”
এ বক্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূল থেকে বলা হচ্ছে, লবী যখন দলের বাইরে ছিলেন, তখন রাজপথে যারা লড়াই করেছেন তারাই প্রকৃত নেতা।
সাংবাদিক হাসান হিমালয়ের একটি ফেসবুক পোস্ট, যেখানে তিনি রাজনৈতিক সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, তুমুল ভাইরাল হয়েছে। তার পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, “রাজনীতিতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও গুণগত পরিবর্তন না আনলে সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবে।”
২০০১ সালের নির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনের পর উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন আলী আসগার লবী। পরবর্তীতে তিনি বিসিবি’র সভাপতি হন এবং ২০০৫ সালে মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব পান।
ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ সম্পদ জব্দ হয়। ২০১৯ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি দলের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, “দলের হাই কমান্ডের নির্দেশেই আলী আসগার লবী খুলনা-৫ আসনে কর্মসূচিতে অংশ নেন। তবে তার নির্বাচন প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত শীর্ষ নেতারা নেবেন।”