রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি একাডেমিক ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও অন্তত অর্ধশতাধিক, যাদের বেশিরভাগই স্কুলের শিক্ষার্থী।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। দুর্ঘটনার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়, এবং একাডেমিক ভবনের একটি গেট ও ক্লাসরুমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে সাংবাদিকদের জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও অনেককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাদের ইউনিটে অর্ধশতাধিক দগ্ধ ব্যক্তি চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী এবং সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। বিমানচালক বা ক্রুদের বিষয়ে কোনও তথ্য জানায়নি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। তবে তারা জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের অংশ।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাকবলিত ভবনটিতে তখন ক্লাস চলছিল। আগুনে পুড়ে শিক্ষার্থীরা আহত হন। ফায়ার সার্ভিস জানায়, তাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে—দুপুর ১টা ২২ মিনিটে।
এদিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অন্তত ২৮ জনের নাম পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর বয়সী। এখনও অনেকেই হাসপাতালে আসছেন।
দুর্ঘটনার ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাষ্ট্রীয়ভাবে এক দিনের শোক ঘোষণা করেছে সরকার। এদিন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। দেশের সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহত ও আহতদের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।