ঢাকার গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচজন গ্রেপ্তারের পর ছাত্র রাজনীতির কয়েকটি সংগঠন নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছে। ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজির এই অভিযোগ ঘিরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা হলেন—ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদাব, আমিনুল ইসলাম এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ। তারা সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবি করেন এবং দশ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বাকি টাকা আনতে এসে তারা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। চারজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় ছাত্র আন্দোলনের তিনটি সংগঠন—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)—নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কিছু অভিযুক্ত ইতোমধ্যে বহিষ্কৃত হয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ফেসবুকে লেখেন, গ্রেপ্তারকৃতদের অনেক আগেই সংগঠন ও মিছিলের নেতৃত্বে দেখা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে হুমকি, মারধর ও অর্থ আদায়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, এনসিপি নেতা মাহিন সরকার এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান দাবি করেন, এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
তিনটি সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যারা এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অপরাধে জড়িত হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে সদস্য যাচাই-বাছাই আরও কঠোরভাবে করার আশ্বাস দিয়েছেন নেতারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, “কঠোর আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া শুধু সাংগঠনিক শাস্তি অপর্যাপ্ত। দৃশ্যমান শাস্তির অভাবেই চাঁদাবাজি বাড়ছে।”