সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫: বিতর্কিত ধারা বাতিলইন্টারনেট নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ৬ মে ২০২৫ তারিখে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ অনুমোদন করেছে। এই অধ্যাদেশে ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং অনলাইন হয়রানি, গুজব ছড়ানো ও ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, নতুন অধ্যাদেশে পূর্ববর্তী সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি বিতর্কিত ধারা বাতিল করা হয়েছে। এই ধারাগুলোর আওতায় হওয়া প্রায় ৯৫ শতাংশ মামলাই এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। বাতিল হওয়া ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, এবং ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া সংগ্রহ ও ব্যবহার সংক্রান্ত বিধান।
নতুন অধ্যাদেশে অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সাইবার জগতে নারী ও শিশু নির্যাতন ও যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর মাধ্যমে সহিংসতা উসকে দেওয়াকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই অপরাধগুলোর জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এবং এগুলো জামিনযোগ্য করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হলে সেটিও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথমবারের মতো এই ধরনের অপরাধকে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। Prothomalo
অধ্যাদেশটি আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট আকারে প্রকাশিত হলে তা কার্যকর হবে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার সাইবার অপরাধ দমন এবং নাগরিকদের ডিজিটাল অধিকার সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।