সীমান্ত উত্তেজনা: ব্যবহৃত অস্ত্রে কার কত প্রস্তুতি?

✍️ প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাশ্মীরের পেহেলগাম নিয়ে উত্তেজনায় ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: ব্যবহৃত সমরাস্ত্র নিয়ে বাড়ছে কৌতূহল

কাশ্মীরের পেহেলগাম অঞ্চলকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনায় জড়িয়েছে চিরবৈরি প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪১ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি থিতু না হওয়ায় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

সাম্প্রতিক এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে ব্যবহৃত সমরাস্ত্র নিয়ে জনমনে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, ‘অপারেশন সিঁদুরে’ অভিযানে ভারত বিভিন্ন উচ্চ ও দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করেছে। উল্লেখযোগ্য অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল, হেমার বোমা এবং লোটারিং মিউনিশন নামে পরিচিত আত্মঘাতী ড্রোন।

ব্যবহৃত প্রধান অস্ত্রসমূহ:

  • স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল: আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য এই দূরপাল্লার মিসাইল প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। এটি মূলত শত্রুপক্ষের বাঙ্কার, সামরিক ঘাঁটি ও শক্তিশালী স্থাপনাগুলো ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়।
  • হেমার বোমা: এটি একটি গাইডেড স্মার্ট বোমা, যা ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের কংক্রিট নির্মিত অবকাঠামো ও ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর।
  • লোটারিং মিউনিশন: নজরদারি ও আক্রমণ একত্রে চালাতে সক্ষম এই আত্মঘাতী ড্রোনগুলো শত্রুর অবস্থান শনাক্ত করে আকাশ থেকেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আঘাত হানে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, অভিযানের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসী সংগঠনের ঘাঁটি। পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোর কোনোটি লক্ষ্যবস্তু ছিল না। হামলার লক্ষ্যবস্তুগুলো পূর্ব-নির্ধারিত এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছিল। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে চারটি ছিল পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে এবং পাঁচটি পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চলে।

এদিকে ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা আঘাত হেনেছে। ইসলামাবাদের হামলায় ভারতের কাশ্মীর অংশে অন্তত ১৫ জন নিহত এবং আরও ৪৩ জন আহত হয়েছে। পাল্টা আক্রমণের সময় সীমান্তে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি মিগ-২৯। যদিও এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

স্থলভাগের সমরাস্ত্র তুলনা:

স্থলবাহিনীর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ব্যবহারে ভারত এগিয়ে থাকলেও সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি ও মোবাইল রকেট লঞ্চার ব্যবহারে পাকিস্তানের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।

অস্ত্রপ্রকারভারতপাকিস্তান
ট্যাংক৪,২০১২,৬২৭
সাঁজোয়া যান১,৪৮,৫৯৪১৭,৫১৬
সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি১০০৬৬২
মোবাইল রকেট লঞ্চার২৬৪৬০০
টোউড আর্টিলারি৩,৯৭৫২,৬২৯

তবে পাকিস্তান ঠিক কোন ধরণের অস্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতের জবাব দিয়েছে—তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

📰 www.deeptobangladesh.com
May 7, 2025

সীমান্ত উত্তেজনা: ব্যবহৃত অস্ত্রে কার কত প্রস্তুতি?

<< বিস্তারিত কমেন্টে >>