বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা বাংলাদেশের স্বার্থে এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে শনিবার অনুষ্ঠিত খেলাফত মজলিসের নির্বাহী কমিটির মাসিক সভায় তিনি এই বক্তব্য দেন। মামুনুল হক তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে একটি ‘সন্ত্রাসী, ধর্মবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “বাংলাদেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করতে জাতিকে বিভক্ত, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ইসলামি মূল্যবোধশূন্য করতে এই দলটির কোনো অপচেষ্টা বাকি ছিল না।”
তিনি বলেন, “বিডিআর হত্যা, শাপলা গণহত্যা, জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ হাজার হাজার খুন-গুম-অপহরণ সংঘটিত করেছে যেই দল, সেই দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজন।” মামুনুল হক অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম দেশের ইসলামী চেতনার বিরুদ্ধে এবং তাদের শাসনব্যবস্থা নিপীড়নমূলক। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জনগণের প্রত্যাশা ছিল স্পষ্ট সিদ্ধান্ত, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আসছে না বলেই আন্দোলনের ভাষা আরও তীব্র হবে।
‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব’ প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, এই বিপ্লব ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত। এটি ব্যর্থ করতে যারা চায়, তারা আসলে দেশের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করতে চায়। তিনি বলেন, “আপনারা দেয়াললিখন আর গ্রাফিতি সংগ্রহ করেছেন, বিতরণ করছেন। সেগুলো পড়ুন, বুঝুন—এই জাতি কী বলছে।” সরকার যদি জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
নারীসংস্কার কমিশন নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, “সরকার নারী-পুরুষের নামে আসলে ধর্ম সংস্কারের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এই কমিশনের কার্যক্রম ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত।” মামুনুল অবিলম্বে তথাকথিত নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানান। পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থা নিরসনে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মাহবুবুল হক, মুফতি শরাফত হোসাইনসহ খেলাফত মজলিসের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মামুনুল হকের বক্তব্য দেশব্যাপী রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
