যুক্তরাজ্য সরকারের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ চেয়েছেন, যেখানে তিনি দুর্নীতি সংক্রান্ত ‘একটি ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে আগ্রহী।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগ করেছে, তিনি বা তার মা ‘ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে’ ঢাকায় ৭ হাজার ২০০ বর্গফুট জমি নিয়েছেন। টিউলিপ এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক চিঠির মাধ্যমে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাক্ষাতের অনুরোধ জানান। ড. ইউনূস সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যে চারদিনের সফরে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি রাজা চার্লস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ সময়ের মধ্যে টিউলিপ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ চেয়েছেন।
চিঠিতে টিউলিপ উল্লেখ করেন, তিনি আশা করেন এই সাক্ষাৎ দুদকের প্রচারিত ভুল ধারণা দূর করতে সহায়ক হবে। তিনি আরও লেখেন, তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনে পার্লামেন্টের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যদিও বাংলাদেশের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা রয়েছে, সেখানে তাঁর কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই।
টিউলিপ দাবি করেন, তাঁর আইনজীবীরা দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কমিশন কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, এই ‘কাল্পনিক তদন্তের’ প্রতিটি অগ্রগতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, অথচ তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, তাঁর কাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই বিভ্রান্তিকর প্রচার বন্ধ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, দুদক শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অবকাঠামো খাতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে। টিউলিপ একে তাঁর খালার বিরোধীদের পরিচালিত ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ বলে দাবি করেছেন।
গত মাসে বাংলাদেশের একটি আদালত টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তবে তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁর কোনো তথ্য নেই। একই সময় যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) লন্ডনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রায় নয় কোটি পাউন্ডের বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান