খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অচিরেই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (৬ মে) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া বর্তমানে মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেকটাই ভালো আছেন। লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। এসময় তিনি কাতার ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।”
ডা. জাহিদ আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার ছোট পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান বর্তমানে দেশে আছেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি লন্ডনে ফিরে যাবেন এবং তারেক রহমানকে নিয়ে দ্রুতই আবার দেশে আসবেন। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়।”
বিদায়ের দিন ছিল আবেগময়
এর আগে, সোমবার (৫ মে) লন্ডন সময় দুপুরে তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। প্রবাসজীবনের ১৭ বছর পর মাকে বিদায় জানানো ছিল তার জন্য আবেগঘন মুহূর্ত। বিমানবন্দরে হাজার হাজার প্রবাসী বিএনপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিদায়ের সময় প্রবাসীরা স্লোগান দিয়ে বেগম জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান। খালেদা জিয়া হাসিমুখে হাত নাড়িয়ে তাদের সাড়া দেন। তিনি নেতাকর্মীদের তারেক রহমানকে দেখে রাখার আহ্বান জানান।
দেশে ফেরার মুহূর্ত ছিল উৎসবমুখর
মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১১টা ২০ মিনিটে তিনি গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে বাসভবনে পৌঁছান। এ সময় দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিএনপির শত শত নেতাকর্মী। তাঁরা উল্লাস করে প্রিয় নেত্রীকে স্বাগত জানান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারাও ছিলেন তাঁর পাশে।
চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে তিনি চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। চিকিৎসা শেষে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরে আসেন।
নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা
খালেদা জিয়ার ফেরাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে আশা জেগেছে। তাঁরা মনে করছেন, দলের নেতৃত্বে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নতুন গতি আনবে।
লন্ডন থেকে দেশে ফেরা এই নেতা শুধু একজন রাজনীতিবিদ নয়, নেতাকর্মীদের কাছে তিনি অনুপ্রেরণার উৎস। আর তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের বার্তা সেই অনুপ্রেরণাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।