গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক রাতে অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে রবিবার জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে নতুন করে মধ্যস্থতা শুরু করেছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খলিল আল-দেকরান রয়টার্সকে জানান, রাতভর অন্তত ১০০ জন শহীদের খবর পাওয়া গেছে এবং অনেক পরিবার নাগরিক নিবন্ধন তালিকা থেকে পুরোপুরি মুছে গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে গাজাজুড়ে বিস্তৃত হামলা চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যার লক্ষ্য নতুন স্থল অভিযান চালিয়ে গাজার নির্দিষ্ট অঞ্চলে ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ’ নিশ্চিত করা।
হামাস বলেছে, তারা কেবল যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরায়েলিদের মুক্তি দেবে। নতুন দফায় মধ্যস্থতা শুরু হয়েছে শনিবার থেকে, তবে রয়টার্সকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ আরাবিয়া ও বিবিসি জানিয়েছে, হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের প্রায় অর্ধেককে মুক্তি দিতে চায় এবং ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
রাতের এক হামলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে একটি তাঁবুতে আঘাত হানে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান, এতে নারী-শিশুসহ বহু মানুষ নিহত হন এবং বেশ কয়েকটি তাঁবু আগুনে পুড়ে যায়। হামাস এই ঘটনাকে নতুন একটি নৃশংস অপরাধ বলে অভিহিত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে এই সহিংসতার জন্য দায়ী করেছে। গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে এবং খাদ্য ও জ্বালানির অবরোধে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তরের অন্যতম প্রধান ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল এখন আর চালু নেই; শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি রক্তের প্রয়োজনের কথা জানিয়েছে। প্যালেস্টাইনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের ৭৫ শতাংশ অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ হয়ে গেছে জ্বালানি সংকটে এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জ্বালানি সরবরাহ না হলে সব যানবাহন অচল হয়ে পড়বে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযানে এ পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় সব বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
